বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় পোশাক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ডিবিএল গ্রুপ ব্যবসার সম্প্রসারণের জন্য ময়মনসিংহের ভালুকা এলাকায় অবস্থিত গ্লোরি টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলস কারখানাটি কিনে নিয়েছে। এই কারখানাটি ৪০০ কোটি টাকার বিনিময়ে অধিগ্রহণ করেছে প্রতিষ্ঠানটি, এবং আগামী পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর থেকে তাদের তত্ত্বাবধানে উৎপাদন শুরু হবে।
গ্লোরি টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলস প্রতিষ্ঠানের মালিকানা পরিবর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিবিএল গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান এম এ রহিম। তিনি জানান, গ্লোরি গ্রুপের ব্যবস্থাপনায় থাকা এই পোশাক কারখানাটি ৩৬ বিঘা জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং এর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ইউনিট যেমন নিটিং, ডায়িং, প্রিন্টিং ও এমব্রয়ডারি। কারখানার পণ্য রপ্তানি করা হবে বিশেষত নিট পোশাক।
ডিবিএল গ্রুপের শীর্ষ কর্মকর্তা এম এ রহিম জানান, গ্লোরি টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলসের ব্যাংক ঋণ গ্রহণ করে এই কারখানার মালিকানা অর্জন করা হয়েছে। যদিও গ্লোরি গ্রুপের অধীনে প্রতিষ্ঠানটি কিছুটা সংকটে ছিল, তবুও এটি কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। বর্তমানে এখানে ১,১০০ জন কর্মী কাজ করছেন এবং শিগগিরই নতুন কর্মী নিয়োগ করা হবে। পুরোপুরি উৎপাদন চালু হলে এখানে প্রায় ৫ হাজার কর্মী কাজ করবেন।
২০১৭ সালে বিজিএমইএ’র সদস্যপদ পাওয়া এই কারখানাটি দিনে গড়ে ১ লাখ পিস পোশাক উৎপাদন করতে সক্ষম। এছাড়া এখানে ২০ টন কাপড় নিটিং, ৪০ টন কাপড় ডায়িং এবং ৩৫ হাজার পিস প্রিন্টিংয়েরও সক্ষমতা রয়েছে।
এদিকে, ডিবিএল গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান এম এ রহিম জানান, তারা নতুন অধিগ্রহণকৃত এই কারখানা থেকে চলতি বছর ৫ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানির পরিকল্পনা করছেন। আগামী বছর এটির পরিমাণ ১০ কোটি ডলার করার লক্ষ্যে কাজ করবে ডিবিএল। তিনি আরও জানান, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পোশাক রপ্তানিতে তারা ৬০ কোটি ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করার আশা করছেন।
ডিবিএল গ্রুপের ইতিহাস ৩০ বছর আগে শুরু হয়, যখন তারা প্রথম যুক্তরাজ্যে তিন হাজার পোলো শার্ট রপ্তানি করেছিল। বর্তমানে, ডিবিএল গ্রুপ বাংলাদেশের পাঁচ নম্বর শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। তারা বিশ্বের ৫৮টি দেশে পোশাক রপ্তানি করছে, যার মধ্যে ইউরোপ, আমেরিকা, এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকা রয়েছে। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তারা ৪৬ কোটি ১৭ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে।
ডিবিএল গ্রুপ, পোশাক রপ্তানির পাশাপাশি টেক্সটাইল, ওয়াশিং, সিরামিক টাইলস, টেলিযোগাযোগ, এবং ড্রেজিংসহ বিভিন্ন শিল্প খাতেও নিজেদের অবস্থান প্রতিষ্ঠিত করেছে। তাদের মোট বার্ষিক লেনদেন প্রায় ১০০ কোটি মার্কিন ডলার, এবং এদের ২৪টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যার মধ্যে ৪৭ হাজার কর্মী কাজ করছেন।