দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল প্রশাসনিক সংস্থা কনমেবলের প্রেসিডেন্ট আলেহান্দ্রো দমিনগেজ একটি মন্তব্য করে পরবর্তীতে তাতে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন। গত সোমবার তিনি ব্রাজিলিয়ান ক্লাবগুলোকে টারজান ছবির শিম্পাঞ্জির সঙ্গে তুলনা করেন, যার কারণে পরদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
প্যারাগুয়ে থেকে একটি অনুষ্ঠানে কনমেবল প্রেসিডেন্ট কোপা লিবার্তোদোরেস টুর্নামেন্টের ড্র অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় বলেন, “ব্রাজিলের ক্লাবগুলো ছাড়া কোপা লিবার্তোদোরেস টুর্নামেন্টটা যেন টারজান সিনেমায় চিতাহীন!” এটি এমন একটি মন্তব্য ছিল যা তাঁর প্রতি ক্ষোভের সৃষ্টি করে। উল্লেখ্য, টারজান সম্পর্কে প্রখ্যাত আমেরিকান লেখক এডগার রাইস বারোজের কাহিনিতে শিম্পাঞ্জি চিতার চরিত্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল, যা সিনেমায় ব্যাপক জনপ্রিয় ছিল।
এ ঘটনার পর, দমিনগেজ একটি বিবৃতিতে বলেছেন, “আমার মন্তব্যটি একটি পরিচিত উদাহরণ ছিল, এবং তা কোনভাবেই কাউকে অপমানিত করার উদ্দেশ্যে ছিল না। আমি শুধুমাত্র কনমেবল অঞ্চলের ক্লাবগুলোতে ব্রাজিলিয়ান দলগুলোর অবদানকে সম্মান জানাতে চেয়েছিলাম।” তিনি আরও বলেন, “কনমেবলের প্রতিটি দেশের ক্লাবের অংশগ্রহণ ছাড়া কোপা লিবার্তোদোরেস কল্পনাও করা সম্ভব নয়।”
বর্ণবাদ নিয়ে কনমেবল ইতিমধ্যেই বেশ চাপে রয়েছে। এর আগে, গত মার্চে ব্রাজিলের একজন ফুটবলার লুইজি দাবি করেন যে প্যারাগুয়ের ক্লাব চেরো পোর্তেনোর সমর্থকরা তাঁকে বর্ণবাদী আচরণের শিকার করেছেন। এ ঘটনার পর কনমেবল ওই ক্লাবকে ৫০ হাজার ডলার জরিমানা করে এবং তাদের সমর্থকদের লিবার্তোদোরেসে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করে।
এদিকে, ব্রাজিল জাতীয় দলের ফুটবলার ব্রুনো গিমারেস দমিনগেজের মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, “কনমেবলের প্রেসিডেন্টের মন্তব্যগুলো একে একে আমাদের মধ্যে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। আমাদের চিন্তা করা উচিত আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে।” গিমারেস বলেছিলেন যে ব্রাজিলের খেলোয়াড়দের জন্য এমন মন্তব্যে কনমেবল কোন ধরনের শাস্তি প্রদান করতে পারে, তবে তার মতে, আরও বড় সমস্যার দিকে মনোযোগ দেওয়া জরুরি।
পালমেইরাস ক্লাবের সভাপতি লেইলা পেরেইরা বলেন, “আমি ভাবতেই পারছিলাম না যে, দমিনগেজ এমন মন্তব্য করবেন। মনে হচ্ছিল এটি কোনো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি দ্বারা বানানো ভিডিও হতে পারে, কিন্তু এমন মন্তব্য তো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাও করতে পারে না!”
এই ঘটনার পর কনমেবল এবং ব্রাজিলিয়ান ফুটবল মহলের মধ্যে তুমুল আলোচনা ও সমালোচনা তৈরি হয়েছে, তবে দমিনগেজের ক্ষমা চাওয়ার পর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলেও, বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক এখনও অব্যাহত।