
যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা একটি অত্যন্ত ছোট পেসমেকার উদ্ভাবন করেছেন, যা একটি চালের দানার থেকেও ছোট। এই পেসমেকারটির দৈর্ঘ্য মাত্র ৩.৫ মিলিমিটার, প্রস্থ ১.৮ মিলিমিটার, এবং পুরুত্ব প্রায় ১ মিলিমিটার। ছোট আকার সত্ত্বেও, এটি বর্তমান পেসমেকারের মতো একইভাবে কাজ করতে সক্ষম, দাবি করেছেন গবেষকরা।
এই পেসমেকারটি বিশেষভাবে জন্মগত হৃদরোগে আক্রান্ত শিশুদের জন্য তৈরি করা হয়েছে। বিজ্ঞানী জন এ রজার্স জানিয়েছেন, “এটি বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম পেসমেকার হতে পারে।” এই পেসমেকারটি শিশুদের পেডিয়াট্রিক হার্ট সার্জারির সময় ব্যবহার করা যেতে পারে, যেখানে অস্থায়ী পেসমেকারের প্রয়োজন হয়।
বর্তমানে পেসমেকারের অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে হার্টের পেশিতে ইলেকট্রোড স্থাপন করা হয়, এবং পরবর্তীতে যখন আর প্রয়োজন থাকে না, তখন সেটি অপসারণ করা হয়। তবে, পেসমেকারটি ক্ষুদ্র হওয়ায় এটি ব্যবহার শেষে শরীরের মধ্যে নিজেই দ্রবীভূত হয়ে যাবে, ফলে আর অপসারণের প্রয়োজন পড়বে না। হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ ইগর ইয়েফিমভ বলেন, প্রায় ১ শতাংশ শিশু জন্মগত হৃদ্রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করে, এবং তাদের অধিকাংশই অস্থায়ী পেসমেকারের প্রয়োজন হয়। এই ছোট পেসমেকারটির ব্যবহারে অপসারণের জন্য কোনো অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন পড়বে না।
এই ক্ষুদ্র পেসমেকারে একটি গ্যালভানিক সেল সংযুক্ত করা হয়েছে, যা শরীরের জৈব তরলে মিশে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে সক্ষম। এটি শরীরে প্রবেশ করার পর রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে বিদ্যুৎ প্রবাহ সৃষ্টি করে, যা হৃদ্পিণ্ডের কার্যক্রম সক্রিয় করে। নিরাপদে শরীরে প্রবেশ করানোর জন্য আলোর ইনফ্রারেড তরঙ্গদৈর্ঘ্য ব্যবহার করা হয়।
এভাবে, আধুনিক প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের সহযোগিতায়, ছোট আকারের এই পেসমেকার জন্মগত হৃদরোগের চিকিৎসায় একটি বড় পদক্ষেপ হতে পারে, যা শিশুদের জন্য আরও নিরাপদ ও কার্যকরী চিকিৎসার সুযোগ প্রদান করবে।