ফেনীতে ভুল চিকিৎসার অভিযোগে এক চক্ষু বিশেষজ্ঞের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ফেনীর আমলি আদালতে বকুল চৌধুরী নামের এক নারী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই নারী তাঁর ১১ বছরের ছেলে শিশুর চোখের ভুল চিকিৎসার অভিযোগ তুলে মামলাটি দায়ের করেন।
ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অপরাজিতা দাশ মামলাটি গ্রহণ করেছেন এবং ফেনী সিভিল সার্জনকে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত শিশুটি ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, ৩১ জানুয়ারি বকুল চৌধুরী তাঁর শিশুকে চোখে পানি পড়ার সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে ফেনী আই সেন্টারে নিয়ে যান। চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী শিশুটির চিকিৎসা করেন এবং তাঁকে কিছু ওষুধ লিখে দেন। কিন্তু ওই ওষুধ সেবনের পর শিশুটির সারা শরীরে জ্বালা পোড়া শুরু হয় এবং কিছু সময় পর তার শরীরে ফোসকা পড়ে। এরপর শিশুটিকে দাগনভূঞা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ফেনীর একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা জানান, ভুল চিকিৎসার কারণে এমন সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। পরে শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রায় ১০ দিন চিকিৎসা শেষে বর্তমানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে শিশুটি বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছে।
মামলার বাদী বকুল চৌধুরী জানান, ভুল চিকিৎসার কারণে তাঁর ছেলে দুই চোখ হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছে, তাই তিনি প্রতিকার চেয়ে মামলা করেছেন।
মামলার আইনজীবী ফেনী কোর্টের অতিরিক্ত সহকারী কৌঁসুলি (এপিপি) হুমায়ুন কবির বলেন, “ভুল চিকিৎসার কারণে শিশুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তার মা আদালতে মামলা করেছেন। আদালত মামলাটি গ্রহণ করেছে এবং ফেনী সিভিল সার্জনকে ২৮ মে’র মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দিয়েছেন।”
অভিযুক্ত চক্ষু বিশেষজ্ঞ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “যদি রোগীর চোখে সমস্যা থাকে, তাহলে রোগীর পরিবারের উচিত ছিল আমার সঙ্গে সরাসরি কথা বলা। কিন্তু তারা মামলা করেছেন, এখন বিষয়টি আদালতের। আদালত যা সিদ্ধান্ত নেবে, আমি তা মাথা পেতে নেব।”
ফেনীর সিভিল সার্জন মোহাম্মদ রুবাইয়াত বিন করিম জানান, “এ পর্যন্ত আদালত থেকে মামলার কোনো নথি সিভিল সার্জন অফিসে পৌঁছায়নি। নথি হাতে পাওয়ার পর তদন্ত করে প্রতিবেদন নির্ধারিত তারিখের মধ্যে আদালতে জমা দেওয়া হবে।”