ময়মনসিংহের পূরবী সিনেমা হলটি এখন ভেঙে ফেলা হচ্ছে, আর এই পরিবর্তনের ফলে শুধু ‘ছায়াবাণী’ সিনেমা হলটি বেঁচে রইল। শহরে একসময় ছিল পাঁচটি সিনেমা হল—অজন্তা, ছায়াবাণী, অলকা, পূরবী এবং সেনা অডিটরিয়াম। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই হলগুলোর সংখ্যা কমে যায়, আর এখন শুধু ছায়াবাণী সিনেমা হলটি জীবিত আছে।
পূরবী হলটি দীর্ঘদিন ধরে ময়মনসিংহ শহরের একটি পরিচিত নাম ছিল। স্বাধীনতার পর পর এই হলটির যাত্রা শুরু হয়, এবং প্রথমে এর মালিক ছিলেন জমির উদ্দিন। ২০০২ সালে, ভয়াবহ এক বোমা হামলার পর, এটি কিনে নেন আব্বাস উদ্দিন। এরপর থেকে তিনি হলটি পরিচালনা করে আসছিলেন।
বর্তমানে, পূরবী হলটি ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে, এবং এখানে ভবিষ্যতে একটি মার্কেট নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। হলটির ব্যবস্থাপক কাজী দেলোয়ার জানালেন, “গত মাস থেকেই আমরা পূরবী হলটি ভাঙছি। এখানে একটি মার্কেট তৈরি হবে, এবং তার নিচতলায় একটি সিনেপ্লেক্স প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনাও রয়েছে। তবে এটি বাস্তবায়িত হতে চার থেকে পাঁচ বছর লাগবে।”
এমন গুরুত্বপূর্ণ সময়েই কেন এই হলটি ভাঙা হচ্ছে? এই প্রশ্নের উত্তরে কাজী দেলোয়ার বলেন, আমাদের পরিকল্পনা ছিল কোরবানির ঈদের পর হলটি ভাঙা হবে, তবে এখনই ভাঙা শুরু হয়েছে। আমরা শুধুমাত্র কর্মচারী মালিকই এ সিদ্ধান্তের কারণ জানাতে পারবেন।
২০০২ সালের ৭ ডিসেম্বর, ময়মনসিংহের চারটি সিনেমা হল—পূরবী, অজন্তা, অলকা এবং ছায়াবাণী একযোগে হামলার শিকার হয়। নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবি এই হামলাগুলো চালিয়ে ১৭ জন নিরীহ মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়, এবং দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়।
এখন, পূরবী হলের বিদায়ের সময়, ময়মনসিংহের সিনেমা হল সংস্কৃতি একটি নতুন অধ্যায়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে যেখানে শুধুমাত্র ছায়াবাণী সিনেমা হলটি দাঁড়িয়ে আছে।